লিঙ্গ সমতা এবং নারীর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের কাজের প্রশংসা এবং ভালোবাসা প্রকাশের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য উদযাপনের উদ্দেশ্যে নানা আয়োজনে পালিত হয় দিবসটি।
নারী দিবস নিয়ে একাত্তরের সঙ্গে আলাপ করেছেন কয়েকজন নারী, তারা সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিত্ব করেন। কেউ ব্যবসায়ী, কেউ চাকরিজীবী। আবার কেউ বা শিক্ষার্থী।
তারা নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দিবসটি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন। তুলে ধরেছেন সমস্যাও। চেয়েছেন সহানুভূতি ও শ্রদ্ধা।
নিলুজা বেগম
বয়স ষাটের কাছাকাছি। নিলুজা বেগম রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে চা, সিগারেট বিক্রি করেন। তার পরিবারে কেউ নেই। তিনি একাই। পাঁচ হাজার টাকা ভাড়ায় ছোট একটি ঘরে থাকেন। আর দিনে যা রোজগার করেন তা দিয়েই কোনোমতে চলে যায়।
নারী দিবস নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, নারীদের আবার দিবস কিসের? আমি তো আগে-পরে শুনিনি। কেউ কখনো আমাদের জন্য আলাদা দিন আছে তা বলেনি। প্রতি দিনের মতো আজও একইভাবে কাটছে। কোনো বিশেষত্ব নেই।
নারী হলেও কাজ করা লাগে। ছেলে সন্তানরাই খোঁজ নেয় না। তারাই তো মা বলে আলাদা কোনো সম্মান দিলো না। আর বাইরের মানুষের কথা বলারই বা কি আছে, যোগ করেন নিলুজা।
রিমা খাতুন
মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন অ্যান্ড হসপিটালের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রিমা খাতুন। তার মতে নানানভাবে নারীদের ঘরেও হেনস্তা হতে হয়। অনেক সময়ে শুধু নারী বলে অনেক ধরনের ‘কটু কথা’ শুনতে হয়। এমনকি অনেক পরিবারের সদস্যরা নারীদের পড়াশোনা বিষয়ে ততোটা গুরুত্ব দেননা যতোটা একজন পুরুষ বা ছেলের ক্ষেত্রে হয়।
তিনি বলেন, আমি যখন মেডিক্যালে ভর্তি হতে যাই, তখন বাড়ির পাশের এক হুজুর আঙ্কেল বাবাকে বললেন, মেয়ে মানুষের এতো পড়াশোনা করতে হবে কেনো। বিয়ে দিয়ে দেন। কিছুদিন পর দেখি সেই আঙ্কেলই হাসপাতালে তার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন আর বলছেন, নারী চিকিৎসক দরকার। এখন তার প্রথম কথা ধরে যদি আমি বা অন্য যারা মেডিকেলে পড়ছেন- পড়াশোনা বাদ দিয়ে দেন- তাহলে তারা নারী চিকিৎসক কোথায় পাবেন?’